কফি!


বিশ্ববিদ্যালয় (ছাত্র) জীবনে সম্ভবত আমার সবচেয়ে আপনজন ছিল এই কফি! শনি-বৃহস্পতি প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলতো বিভাগের ক্লাস, কখনও কখনও আরও দেরী। বাসায় ফিরে একটু পর আবার বন্ধুদের সাথে আড্ডা, রাতের খাবার শেষে বোধহয় রাত ১২টার আগে কখনও বইপত্র নিয়ে বসতে পারি নি। এই রাতেই আমার নিরবিচ্ছিন্ন সঙ্গী হতো কফি! সে অর্থে বলতে গেলে আমার একাডেমিক বা রিসার্চ ক্যারিয়ারের যাবতীয় সাফল্যের পিছনে এই কফি!

রাত জাগার অভ্যেস ছাড়তে পারিনি; চেষ্টা যে করিনি তা নয়, বহুবার ঘটা করে ফজরের সময় ঘুম থেকে উঠে দিন শুরু করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছি- শুরুতে দুএকদিন কাজ হলেও কদিন পরেই ‘যে লাউ সেই কদু’ দশা। আমার জন্য ফজরের পরে বিছানায় যাওয়াটিই বেশি স্যুট করে! কর্মজীবনের প্রায় ১২ বছরেও যাবতীয় কাজই করেছি এই রাতেই, সাথে ছিল বিভিন্ন ব্রাণ্ডের কফি! কফি জিনিসটা আমার জীবনে একরকম শিল্পের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে! বিদেশ থেকে সবাই ব্যাগ ভর্তি করে কত কি নিয়ে আসে, আমিও আনতাম... তবে জারের পর জার ভর্তি Douwe Egberts! 

বিয়ের পর বউকে আর কিছু শিখাতে পেরেছি কি না জানি না কিন্তু এই কফি যে আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছে সেটি মোটামুটি নিশ্চিত! স্বাভাবিক সময়ের বাইরে প্রতিরাতে ২-৩টার মধ্যে কফি খাওয়া আমাদের বোধহয় অদ্ভুত স্বভাবগুলির একটি! রাজশাহীর বাইরে কোথাও গেলেও সর্বপ্রথম আমি যে জিনিসটি খুঁজি, সেটি সম্ভবত কোথায় কফি পাওয়া যাবে! 


আজ হঠাৎ মাঝরাতে এসে মনে হলো এই কফিকে একটু ক্রেডিট দেয়া দরকার...


 

বি.দ্র. বউ এক মাসের জন্য ট্রেনিংয়ে রাজশাহীর বাইরে...



No comments:

Post a Comment