গতকাল আমরা আমাদের এক
ছোটভাইকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়েছি। ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ছোটভাইটি
প্রচণ্ড জ্বরে ভুগছে। যাহোক ডাক্তার দেখানোর পর আমরা পাশের একটি ওষুধের দোকানে
গেলাম ওষুধ কিনতে। ওষুধ কেনা শেষ করে আমরা দোকান থেকে বেরিয়ে আসবো এমন সময় কিছু
লোক হাজির, তাদের অনুরোধ “ভাইয়া প্রেসক্রিপশনটা একটু দেখানো যাবে প্লিজ?” এমন
ভদ্রস্থ অনুরোধ উপেক্ষা করা যায় না! সেটি অনুরোধকারীর হাতে দিতেই তাদের বেশ
কয়েকজনের পকেট থেকে বেরিয়ে এলো পয়েন্ট এণ্ড শুট ডিজিটাল ক্যামেরা এবং পড়তে থাকলো
ফ্ল্যাশ! আমরা তো বেশ অবাক যে দেখার নাম করে হাতে প্রেসক্রিপশন নিয়েই এ কি কাণ্ড!
এ ঘটনা ঘটার সময়ই বুঝতে
পারলাম যে এই লোকগুলি ওষুধ কোম্পানির নিজস্ব লোক। তারা জাস্ট যাচাই করছে যে
ডাক্তার তাদের কোম্পানির ওষুধসমূহ প্রেসক্রিপশনে লিখেছে কি না! তাহলেই বুঝুন আমরা
কোথায় আছি এবং আমাদের দায়িত্ববোধ কোথায় ও কোন পর্যায়ে গেছে। আমাদের দেশের
ডাক্তারদের এমনিতেই খুব একটা সুনাম নেই, কারণ তাদের ভিজিট এর তুলনায় রোগী
পরীক্ষণের সময় অনেকেরই নিতান্তই কম মনে হয়। অবশ্য এ বিষয়ে আমার অতি পরিচিত একজন ডাক্তারের
ভাষ্য হলো “বেশী সময় দিলে রোগী রোগের প্রসঙ্গ ছেড়ে আলতু-ফালতু কথা
বলে!” এতদিন ভাবতাম যে ভিজিট যাইহোক না কেন ডাক্তার তো ঔষধ
ঠিকমতই দেয়... এখন দেখছি ঔষধ প্রদানের ক্ষেত্রেও তারা ঔষধ কোম্পানির কাছে দায়বদ্ধ!
ঘটনাটি স্বচক্ষে দেখার
জন্য যেকেউ যেতে পারেন রাজশাহী শহরের লহ্মীপুরের ব্যস্ত ঔষুধের দোকানগুলোতে। বেশ
মজা (না কষ্ট?) পাবেন।
হয়তোবা সবাই এই
ক্যাটেগরিতে পড়েন না। পড়ার কথাও না। কিন্তু চোখে যা দেখি এবং আশেপাশের সবার কাছে
থেকে যা শুনি তাতে তো ব্যতিক্রম খুজে পাই না! অবশ্য অনেকে বোধহয় বলবেন আমরা তো এমন
না... কিন্তু সত্যটা কি জানেন? আপনি এখনও তেমন বিখ্যাত হননি এবং সেকারণেই আপনার
পিছনে ঔষধ কোম্পানির লোকেরা ফ্রিজ, এসি নিয়ে ঘুরে না! শুনতে খারাপ লাগলে সেটিই
সত্য। অফারগুলো তো আগে পান, তারপর সেগুলোকে রিফিউজ করার পড়ে বইলেন!
আবার অনেকে হয়তো বলবেন
যে একই গ্রুপের ঔষধই তো সব কোম্পানিরই এক। সুতরাং সমস্যা কোথায়? সমস্যা নেই কোন
সমস্যা নেই... দায়বদ্ধতা অনেক বাজে একটি বিষয়... কোথাও দায়বদ্ধ থেকে মন থেকে কারো
কারো সেবা করা যায় কি না তা নিয়ে আমাদের অনেকেরই সন্দেহ আছে, বিশেষ করে
দায়বদ্ধতাটির সাথে যখন আর্থিক সুবিধা যুক্ত থাকে!
No comments:
Post a Comment