কপোতাক্ষের দুধ-চা!

বুধবার ব্যাতীত সপ্তাহের বাকী ছয়দিনই খুলনা-রাজশাহী রুটে চলাচল করে আন্ত:নগর কপোতাক্ষ ট্রেনটি। চাকুরীর সুবাদে আমি এবং আমার ক’জন সহকর্মী এই ট্রেনের নিয়মিত যাত্রী। ট্রেনে উঠলে আমরা সবাই সাধারণত চা খেয়ে (পান করে!) থাকি। যাহোক, এই ট্রেনটিতেও চা পাওয়া যায়। তবে কিছুদিন আগে পর্যন্তও এই ট্রেনে দুধ চা চাইলে বলা হতো “দুধ চা হবে না/নেই।” কাহিনী কি? জানা গেল মালিকের (ক্যান্টিন ম্যানেজার) নিষেধ আছে। যেহেতু লাল/আদা চা বা দুধ চা সবগুলোরই মূল্য সমান, তাই দুধ চা বন্ধ, কারণ এতে দুধ দিতে হয় বলে খরচ বেশী পড়ে!


গত সপ্তাহেও আমরা যথারীতি এই ট্রেনে কর্মস্থলে ফিরে আসছি। চা খাব, আমরা ক্যান্টিন বয়কে খুঁজছি এমন এসময় ট্রেনে একজন নতুন ক্যান্টিন বয়কে লক্ষ্য করলাম। তাকে দুধ-চা এর কথা বলাতেই সে রাজী হয়ে গেল! আমরা চিন্তা করলাম যাক হয়তো ট্রেনের ক্যান্টিনের সার্ভিস উন্নত হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পর এলো আমাদের সাধের চা। চা দেখে তো আমাদের আক্কেলগুড়ুম! ব্যাপার কি? ব্যাপার হলো চায়ের কাপে দুটি টিব্যাগ! এবং সেগুলো এতটাই ফুলে-ফেপে আছে যে দেখে সন্দেহ হয় যে এর আগেও টিব্যাগগুলো ব্যবহৃত হয়েছে। ঘটনা কি জানতে চাইলেই ক্যান্টিন বয় এর ঝটপট জবাব দুধ-চা তে দুটি টিব্যাগ দেয়াই নাকি নিয়ম! যা হোক কোন মতে চা শেষ করে বিল দেবার সময় আরেকবার আক্কেলগুড়ুম! দাম মাত্র ১২ টাকা প্রতি কাপ চা, যেখানে সকল ধরনের চা-ই ৬ টাকা করে নেয়া হয়! কারণ কি? কারণ হলো ডাবল টিব্যাগ, তাছাড়া গত ৩ মাস ধরে নাকি দুধ-চা ১২ টাকা কাপ।

যাহোক আমরা ক্যান্টেন বয় এর সাথে আর তর্কে গেলাম না, তাকে তার কাঙ্খিত বিল দিয়ে বিদায় করে দিলাম এবং ঠিক করলাম এই ট্রেনে আর চা খাব না! আপনারা যারা এই লেখাটি পড়বেন তাদের প্রতি অনুরোধ হলো ট্রেনে কখনও চা খেলে দয়া করে টিব্যাগটি জানালা দিয়ে বাইরে ফেলে দেবেন যাতে করে তা পুনরায় অন্যকারো কাপে হাজিরা দিতে না পারে!

No comments:

Post a Comment